ঘরে বসে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা কিভাবে করবেন?

অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা

স্কিনের হাইড্রেশন লেভেল ঠিক রেখে হারানো গ্লো ফিরিয়ে আনা, সজীব ও সতেজ রাখা, চুল পড়া রোধ করা, চুল ঘন ও লম্বা করা এসব এর জন্য যেসব কসমেটিক্স আমরা সচরাচর ব্যবহার করি সেগুলোর একটি সাধারণ উপাদান হল অ্যালোভেরা। অনেক ধরণের ঔষধি উপাদান থাকায় সৌন্দর্য জগতে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার প্রচলন ও ব্যবহার অনেক বেশী।

স্কিন ও হেয়ার কেয়ারে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার গুরুত্ব সবারই কম বেশি জানা আছে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই রূপচর্চার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান অ্যালোভেরাকেই বেছে নিয়েছি। কিন্তু এই অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করে আমরা কি সব সময়ে সঠিক এবং কার্যকরী ফলাফল পাচ্ছি? মনে হয়তো না…!!!

এর আসল কারণ হলো আমরা অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে জানি না। তাই আমরা আমাদের আজকের আলোচনাটি সাজিয়েছি অ্যালোভেরা কিভাবে স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের জন্য ইউজ করবেন এবং এর বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানিয়ে দিতে।

অ্যালোভেরা কি?

ইংরেজিতে এই উদ্ভিদের নাম অ্যালোভেরা বলা হলেও গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে এটি ঘৃতকুমারী নামে পরিচিত যা একটি বহুগুণ সম্পন্ন ভেষজ ওষধি উদ্ভিদ। এতে রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমনঃ ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি।

নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে আপনি এই প্রাকৃতিক উদ্ভিদের উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারেন। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা শুধু ত্বকের উজ্জ্বলতা আনে তা নয়, নানান ধরণের স্কিন প্রবলেম থেকেও ত্বক কে সুরক্ষিত রাখে। এই উদ্ভিদে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট থাকার ফলে প্রাকৃতিক এই উদ্ভিদ দ্বারা বিভিন্ন প্রকার বিউটি প্রডাক্ট তৈরী করা হয়।

তাছাড়া এই উদ্ভিদে রয়েছে  মেনাস, ল্যাকটিন, পলিস্যাকারাইড ইত্যাদি।  যা ত্বকের পাশাপাশি চুলকে শাইনি সিল্কি ও ঝলমলে করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অ্যালোভেরা চাষ কম খরচে লাভজনক হওয়ায় আমাদের দেশের অনেক কৃষকেরা এ ব্যবসায় ঝুঁকছে। ফলে তারা লাভবান হচ্ছে। এই উদ্ভিদ প্রচুর কার্যকরি, জনপ্রিয় ও সহজলভ্য হওয়ায় নার্সারী তে সহজেই এ গাছের চারা পাওয়া যায়। বাড়ির আঙ্গিনায় টবে বা ছাদে উপযুক্ত মাটি পেলে সহজেই এ গাছের চারা লাগিয়ে অ্যালোভেরা চাষ করা যেতে পারে।

অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা : স্কিন ও হেয়ারের কি কি বেনিফিট হতে পারে?

অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা ও এর উপকারিতা  সম্পর্কে জানার আগ্রহ আমাদের অনেকেরই। বিশেষ করে মেয়েরা প্রতিনিয়তই গুগলে বিষয়টি অনুসন্ধান করে চলেছেন। চলুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা ও এর উপকারিতা । 

  • স্কিনের একনি বা পিম্পল দূর করতে খুবই কার্যকর
  • পায়ের গোড়ালি ফাঁটা কমায় ও ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে
  • রোদে পোড়া ভাব বা সান বার্ন দূর করে ও স্কিনে সুদিং ইফেক্ট দেয়
  • এন্টি-এইজিং ইফেক্ট দিয়ে ত্বকে আনে ইয়ংগার লুক
  • স্কিনের রিঙ্কেলস বা বয়সের ছাপ দূর করে
  • ত্বককে  সজীব ও সতেজ রাখে
  • চুলকে শাইনি, সিল্কি ও ঝলমলে করে তোলে
  • ন্যচারাল মেক আপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করা যায়

ঘরোয়াভাবে কিভাবে অ্যালোভেরা জেল সংগ্রহ করবেন

সহজে অ্যালোভেরা জেল সংগ্রহ করার উপায়

প্রকৃতির এক অনন্য উপহার হিসেবে ধরা হয় অ্যালোভেরাকে। প্রাকৃতিক উপাদানের মাঝে এই পাতার জেলের রয়েছে সবচেয়ে ভালো ‘হিলিং পাওয়ার’, যা কোন ক্ষতকে দ্রুত সারাতে সবচেয়ে কার্যকরি। বাজারে অ্যালোভেরা খোঁজ করলে আপনি অ্যালোভেরার তৈরি অনেক ধরনের জেল বা প্রোডাক্ট পাবেন। কিন্তু বিউটি এক্সপার্টদের মতে ঘরোয়াভাবে অ্যালোভেরা জেল তৈরি করে তা ব্যবহার করে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করতে পারলে সবচেয়ে ভাল এবং উপকারও পাওয়া যায় বেশী।

স্বাস্থ্য গুণে ভরপুর এই অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যায় প্রায় সকল কাজেই। শরীরে কোথাও কেটে গেলে, রোদে পোড়াভাব দূর করতে, চুল ও ত্বকের পরিচর্যায় ও শরবত হিসেবে খাওয়া যায় দারুণ এই উপাদানটি.

  • বাজার কিংবা সংগ্রহের স্থান থেকে যথাসম্ভব সতেজ অ্যালোভেরার পাতা  সংগ্রহ করুন।। এবং নিশ্চিত হয়ে নিন সেখানে কোন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়নি। অন্যথায় এটি আপনার ত্বকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে
  • অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য কাটার পূর্বে ভালোভাবে ধুয়ে  পরিষ্কার করে নিন
  • পরিষ্কার কিছু ব্যবহার করে পরিমান মত অ্যালোভেরা কেটে নিন
  • একটি পরিস্কার পাত্রে জেলের মত অংশটি সংরক্ষণ করুন

সংরক্ষণের উপায়

হাতের নাগালে সবসময় অ্যালোভেরা পাওয়া সম্ভব হয় না। দেখা যায় প্রয়োজনের সময়েই বাজারে অ্যালোভেরার কোন খোঁজ নেই। এমন সমস্যা এড়াতে চাইলে একবারে বেশি করে অ্যালোভেরার জেল সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। জেনে রাখুন অ্যালোভেরা সংরক্ষণের তিনটি চমৎকার উপায়। যার ফলে একবারে তৈরী করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।

ভিটামিন-ই অয়েলের সঙ্গে সংরক্ষণ

মুখ ও শরীরে ত্বক এবং চুলের পরিচর্যার জন্য যদি অ্যালোভেরা সংরক্ষণ করতে চান তবে এটা সবচেয়ে ভালো উপায়। অ্যালভেরার পাতা থেকে চামচের সাহায্যে জেল আলাদা করে এতে ভিটামিন-ই অয়েল মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এতে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য জেলের উপকারিতা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে এর মেয়াদও দীর্ঘস্থায়ী হবে। ব্লেন্ড করা এই অ্যালো জেল মুখবন্ধ কাঁচের জারে সংরক্ষণ করে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে হবে।

মধুর সঙ্গে সংরক্ষণ

পাতা থেকে যতখানি জেল তোলা হয়, সবটুকু কখনোই ব্যবহার করা হয় না। বাড়তি অ্যালো জেল মধুর সঙ্গে সংরক্ষণ করুন। এতে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে অ্যালোভেরা জেল। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল সংরক্ষণের ফলে এই জেল অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য ব্যবহারের পাশাপাশি শরবত হিসেবেও পান করা যাবে।

ভিটামিন-সি’র সঙ্গে সংরক্ষণ

রেফ্রিজারেটরে সাধারণ অ্যালোভেরার জেল রাখা হলে বড়জোর এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকবে। কীভাবে এই জেলের মেয়াদ এক মাস পর্যন্ত উত্তীর্ণ করতে পারবেন? অ্যালোভেরার জেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে রেফ্রিজারেটরে রেখে দিন। এতে করে খুব সহজেই এক মাস পর্যন্ত অ্যালো জেল ভালো থাকবে।   

সতর্কীকরণ

কাটার পর অ্যালোভেরা সরাসরি মুখে না লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। এর ফলে অ্যালোভেরার কাটার স্থান থেকে কিছু হলুদ রঙের জলীয় পদার্থ বের হবে। তা পরিস্কার কোন কিছু দিয়ে মুছে নিন। অন্যথায় অনেক সময়ই এই হলুদ নির্যাস আপনার ত্বকের জন্য এলার্জির কারণ হতে পারে।

আপনার ত্বকে যদি এলার্জি থাকে তাহলে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য সরাসরি মুখে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার না করে, হাতে বা শরীরের অন্য যেকোন জায়গায় ব্যবহার করে দেখুন।

অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সহ স্কিন কেয়ারে অ্যালোভেরা ব্যবহারের নিয়ম

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ত্বক ভালো রাখতে অ্যালোভেরার বিকল্প নাই। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করতে শুধু অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন আবার ফেইস প্যাক বানিয়েও অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনি দুইভাবে ব্যাবহার করলেই উপকার পাবেন।

  • শুষ্ক ত্বকের যত্নের কসমেটিক্স এ অ্যালোভেরা থাকে কারণ এটি ত্বককে সজীব করে যা আপনিও বাসায় করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল ইউজে মুখের ত্বকে লাগালে ত্বক মসৃণ , উজ্জ্বল আর নরম হবে।
  • বয়সের বাড়ার সাথে আমাদের চামড়ায় ভাজ পড়ে  যা আপনি সহজেই রুখতে পারেন এই অ্যালোভেরা ব্যবহার করে কারণ এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ। এই জেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং এর  ভিটামিন এ, বি, সি ও এ  উপাদান ত্বকের পুষ্টি যোগায়। 
  • রোদে পোড়া দাগ  দূর করে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে ও স্কিনের জেন্টেল এক্সফোলিয়েশনের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। 
  • অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান একনি সারাতে আর নুতন কোষ জন্মাতে কার্যকর। অ্যালোভেরার জেল আইস কিউব ট্রেতে করে অ্যালোভেরার আইস কিউব তৈরি করে এই কিউব দিনে দু তিনবার আপনার একনিতে ঘষলে একনির সমস্যা কমে যাবে।
  • ঠোঁট এর রঙ উজ্জ্বল রাখতে ঠোঁট নরম আর মসৃণ করতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ঠোঁটে লাগলেই  ঠোঁট উজ্জ্বল হবে। 
  • অ্যালোভেরার অ্যান্টিসেপটিক গুনাগুনও উল্লেখযোগ্য। অ্যালোভেরার পাতার জেল বের ফ্রিজে রাখুন আর অল্প কেটে গেলে বা ক্ষত হলে লাগান। দিনে দুই বা তিন বার লাগালেই ক্ষত আরাম হবে।

অতি অল্প খরচে বাজারে এই অ্যালোভেরা পাওয়া যায়। আপনার রূপচর্চার এই  ঘরোয়া উপাদানটি আপনাকে সতেজ, সুন্দর আর  উজ্জীবিত রাখবে।

জেনে নিন স্কিন কেয়ারে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য ৫ টি ন্যাচারাল হোমমেইড ফেইসপ্যাক রেসিপি অ্যালোভেরা এবং মুলতানী মাটি

অ্যালোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় অনেকে জানতে চান। মুলতানি মাটির সাথে পরিমাণ মতো অ্যালোভেরা জেল ও কয়েক ফোটা গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট করে এই ফেইস মাস্ক মুখে এপ্লাই করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। 

চার চামুচ অ্যালোভেরা জেল এর সাথে সামান্য পরিমানে কেওলিন, এক চামুচ নিম পাতার গুঁড়া ও এক চামুচ হলুদ গুঁড়া ও এক চামচ মুলতানী মাটি দিয়ে ভাল করে সবগুলো উপাদান একত্রে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। তারপর এই প্যাকটি ভাল করে আপনার মুখে ম্যাসেজ করে লাগিয়ে বিশ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ত্বকে ব্যবহারের বিশ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ব্যাবহার প্রণালীঃ অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করতে এই প্যাকটি আপনি সপ্তাহের প্রতিদিনই একটি নির্দিষ্ট সময়ে অন্তত একবার করে ব্যবহার করতে পারেন।

অ্যালোভেরা এবং শসা

আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল ময়লা দূর করে ত্বককে পরিষ্কার করে তুলতে এই ফেইস প্যাকটি অত্যন্ত কার্যকরী। ফলে আপনার মুখও অনেক সতেজ দেখাবে। এই প্যাকটি তৈরি করতে হলে প্রথমে চার চামুচ অ্যালোভেরা জেল, চার চামুচ শসার রস এবং দুই চামুচ টকদই একত্রে ভাল করে মিক্স করে নিন। তারপর এর সাথে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল অথবা এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে ফেইস প্যাকটি তৈরি করুন।

ব্যাবহার প্রণালীঃ অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করতে এই ফেইস প্যাকটি আপনি প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ধুয়ে নিয়ে ভালকরে ঘষে মুখে লাগিয়ে নিন ও পনেরো মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে পরিস্কার নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

অ্যালোভেরা এবং  মধু

তৈলাক্ত ত্বকে অ্যালোভেরা ব্যবহার এর জন্য অ্যালোভেরার সাথে মধু মিশিয়ে এক ধরনের ফেস মাস্ক তৈরি করা হয়। যা স্কিনের অতিরিক্ত অয়েল কন্ট্রোল করে।

চার চা চামচ অ্যালোভেরা জেল এর সাথে দুই চা চামুচ মধু মিশিয়ে ফেইস প্যাকটি তৈরি করতে হবে। এবার এই প্যাকটি আপনার গালে, গলায় ও ঘাড়ে ভালো করে সার্কুলেশন করে লাগিয়ে নিন। এভাবে লাগানোর পর সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট ধরে মেসেজ করতে থাকুন। তারপর আধা ঘন্টা অপেক্ষা করে ত্বকে প্যাকটি শুকিয়ে গেলে পরিস্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ব্যাবহার প্রণালীঃ অ্যালোভেরা ও মধু দিয়ে তৈরি এই প্যাকটিও আপনি সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় আপনার ত্বক হয়ে উঠবে আরও চকচকে গ্লোয়িং ও ফর্সা।

অ্যালোভেরা ও লেবু ও ভিটামিন ই 

যাদের স্কিন শুকনো তাদের জন্য অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় এই ফেসিয়াল একেবারে উপযুক্ত। আগেই বলেছি অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট যা ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে। ঘরোয়াভাবে এই রেসিপিতে অ্যালোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম তৈরি করেও স্কিনে ইউজ করতে পারেন।

ময়েশ্চারাইজার হিসাবে ও রোদে পোড়া দাগ সারাতে এই ফেস প্যাকটি খুবই কার্যকরী। এছাড়া ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখতেও এই ফেইস প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। চার চা চামুচ অ্যালোভেরা জেল এর সাথে অর্ধেক পরিমান কাগজি লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে পাঁচ মিনিট ধরে আঙ্গুল দিয়ে সার্কুলেশন করে করে ম্যাসেজ করুন। বিশ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভাল করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ব্যাবহার প্রণালীঃ অ্যালোভেরা ও লেবুর তৈরি এই ফেসপ্যাকটি আপনি সপ্তাহে মাত্র তিন দিন ব্যবহার করলেই আপনি পাবেন রোদে পোড়া দাগ মুক্ত নরম তুলতুলে মসৃণ ত্বক।

অ্যালোভেরা এবং নিমপাতা

অ্যালোভেরার মতো, নিমও স্কিন কেয়ারের জন্য একটি মিরাকল উপাদান যা আপনি আপনার ত্বকের যত্নে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা ও নিমপাতা দিয়ে তৈরী ফেইস মাস্ক মাস্কটি আপনার  স্কিন থেকে ডার্টস, টক্সিন ও ইম্পিউরিটিজ দূর করবে। একই সাথে স্কিনে একনি ও পিম্পল ওঠা বন্ধ করতে ও স্কিন থেকে একনি ব্যাক্টেরিয়া দূর করে ব্রণকে ফিরে আসা বন্ধ করতেও এই ফেইস মাস্কটি বেশ কার্যকর। এই মাস্কটি তৈরি করতে একটি পাত্রে এক চা চামচ নিমপাতা গুঁড়োর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন। প্রথমে কিছু রোজ মিস্ট টোনার দিয়ে আপনার ত্বক ভালোভাবে মুছে নিন এবং তারপর এই পেস্টটি আপনার ত্বকে এপ্লাই করে ম্যাসাজ করুন। ১৫-২০ মিনিট পরে, এটি ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন এবং একটি পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে আপনার মুখ মুছুন।

ব্যাবহার প্রণালীঃ অ্যালোভেরা ও নিমের তৈরি এই ফেসপ্যাকটি অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় আপনি সপ্তাহে মাত্র তিন দিন ব্যবহার করলেই আপনি পাবেন একনি ও পিম্পল মুক্ত ফ্ললেস ও  মসৃণ ত্বক।

হেয়ার কেয়ারে অ্যালোভেরা ব্যবহারের নিয়ম 

চুল পরিস্কার রাখতে শ্যাম্পুর বদলে অ্যালোভেরা হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। নারিকেল তেল, লেবুর তেল ইত্যাদির সাথে অ্যালোভেরা মিশিয়ে ব্যবহার করা যাবে। এতে চুল সতেজ থাকে।

হেয়ার ফল বন্ধ করতে

আপনার কি চুল পড়ে যাচ্ছে? সমাধান খুঁজছেন? প্রাকৃতিক ভাবে এর সমাধান বের করতে চাইলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। অ্যালোভেরা জেল মাথায় দিয়ে ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন তাহলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

হেয়ার গ্রোথের জন্য

অ্যালোভেরা জেল, টক দই, কাচা ডিম ইত্যাদির মিশ্রণে চুলের প্যাক তৈরী করতে পারেন। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় এগুলো নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।

চুলকে শাইনি, সিল্কি ও ঝলমলে করে তুলতে

চুলের ময়েশ্চার বাড়াতে অ্যালোভেরার সাথে আর্মন্ড ওয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। চুলের ঝলমলে ভাব আনতে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করা যেতে পারে। আমরা জানি,  সূর্যের ক্ষতিকর রশ্নি ও ধুলাবালির কারণে আমাদের চুল রুক্ষ হয়ে যায়। ফলে চুল ভেঙ্গে পড়ে। অ্যালোভেরা কন্ডিশনার ব্যবহার করলে এ সমস্যা দূর হতে পারে ।

হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে

খুব সহজে বাসায় বসে এই কন্ডিশনার তৈরি করে ফেলতে পারেন। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হলো প্রথমে একটি পাত্রে নিদিষ্ট পরিমাণ অ্যালোভেরা জেল নিন তারপর সে পাত্রে একটি লেবু কেটে রসগুলো অ্যালোভেরার সাথে মেশান মেশানো হয়ে গেলে তিন-চার ফোটা নারিকেল তেল পাত্রে দিন ব্যাস তৈরী হয়ে গেলো অ্যালোভেরা কন্ডিশনার।

জেনে নিন হেয়ার কেয়ারে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য কয়েকটি ন্যাচারাল হোমমেইড রেসিপি

যদিও অ্যালোভেরা চুলের বৃদ্ধির জন্য নিজেই একটি দুর্দান্ত ঔষধ হিসাবে কাজ করতে পারে, তবে এটি অন্যান্য কিছু জিনিসের সাথে মিলিত হলে এর প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তাহলে আসুন এখন জেনে নিই সেই সব জিনিস সম্পর্কে যা দিয়ে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায়।

অ্যালোভেরা এবং ক্যাস্টর অয়েল

হেয়ার গ্রোথ ও পারফেক্ট হেয়ার কন্ডিশনিং এর জন্য এই হোমমেইড হেয়ার প্যাক খুবই কার্যকরি। 

আপনার যা যা প্রয়োজন-

  • এক কাপ তাজা অ্যালোভেরা জেল
  • দুই টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল
  • দুই চা চামচ মেথি গুঁড়া

রেসিপি-

একটি পাত্রে সব উপকরণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এই মিশ্রণটি গোসলের দুই ঘন্টা আগে আপনার চুলে এপ্লাই করুন। এরপর দুই ঘণ্টা পর ঠান্ডা পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে কন্ডিশনার লাগান। এই প্যাকটি সপ্তাহে একবার বা দুবার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

মধু এবং অ্যালোভেরা

মধু অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ সমৃদ্ধ। মধু ও অ্যালোভেরার এই হেয়ার মাস্ক ইউজে খুশকি এবং চুল পড়া সমস্যা থেকে মুক্তি পান সহজেই। 

আপনার যা যা প্রয়োজন-

  • 5 চা চামচ অ্যালোভেরা জেল
  • তিন টেবিল চামচ নারকেল তেল
  • দুই চামচ মধু

রেসিপি-

একটি পাত্রে সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে একটি স্মুথ পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এটি চুলের গোড়া থেকে লাগানো শুরু করুন এবং চুলের আগা পর্যন্ত দিন। এই মিশ্রণটি সবচেয়ে বেশি চুলের আগায় এপ্লাই করুন, কারণ চুলের এই অংশটি সবচেয়ে বেশি নষ্ট হয়ে যায়। ১৫-২০ মিনিট পর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার লাগিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এই হেয়ার মাস্কটি সপ্তাহে একবার ইউজ করা যেতে পারে।

ডিম এবং অ্যালোভেরা

ডিমের কুসুমে আছে চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পেপটাইড। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় হিলিং এনজাইমের সাথে এই হেয়ার মাস্ক আপনার চুলের পারফেক্ট গ্রোথ ও ড্যামেজ রিপেয়ারের জন্য কার্যকরি সলিউশন দিতে পারে। 

  • 4 টেবিল চামচ তাজা অ্যালোভেরা জেল
  • তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
  • একটি ডিমের কুসুম

রেসিপি:

একটি পাত্রে সব উপকরণ মিশিয়ে ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি মাথার তালু এবং চুলে ভালোভাবে লাগান। এই পেস্টটি চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান। এখন এটি প্রায় 20 থেকে 25 মিনিটের জন্য এভাবে রেখে দিন। সময় শেষ হওয়ার পর চুল শ্যাম্পু করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুলে হালকা কন্ডিশনার লাগানোর পর ছেড়ে দিন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে প্রায় একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।

পেঁয়াজ এবং অ্যালোভেরা

পেঁয়াজের রস চুল পড়া সমস্যা রোধে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় চুলের আগা ফাটা ও চুল ভেঙে যাওয়া সমস্যার সব থেকে ভালো সমাধান হতে পারে এই হেয়ার মাস্ক।

  • এক কাপ পেঁয়াজের রস
  • এক চামচ অ্যালোভেরা জেল

দ্রষ্টব্য: উপাদানগুলির পরিমাণ চুলের দৈর্ঘ্য এবং ঘনত্বের উপর নির্ভর করে।

রেসিপি:

তিন থেকে চারটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজ নিন এবং সেগুলি ভাল করে পিষে নিন, তারপর একটি জাল কাপড় বা চালুনি দিয়ে রস বের করুন। এবার এই রসে অ্যালোভেরা জেল মেশান। এই মিশ্রণটি দিয়ে আপনার চুল এবং চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন এবং মিশ্রণটি চুলে ভালভাবে এপ্লাই না হওয়া পর্যন্ত এটি করুন। এবার এক ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর হালকা শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে একবার ইউজ করুন।

নারকেল দুধ এবং অ্যালোভেরা

স্ক্যাল্প ও হেয়ারের পারফেক্ট হেলথ বজায় রাখতে খুবই কার্যকর এই হেয়ার মাস্কটি। জেনে নিন কিভাবে বানাবেন-

  • চার চামচ অ্যালোভেরা জেল
  • চার চামচ নারকেলের দুধ
  • এক চা চামচ নারকেল তেল

রেসিপি:

একটি বাটিতে সব উপকরণ রাখুন এবং ভালো করে মিশিয়ে নিন। একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত উপাদান মিশ্রিত করুন। এবার এই পেস্টটি শিকড় থেকে চুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ভালোভাবে লাগান। চুলে ভালোভাবে লাগানোর পর এভাবে প্রায় এক ঘণ্টা রেখে দিন। সময় শেষ হওয়ার পরে, হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে কন্ডিশনার লাগান। এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।

জবা এবং অ্যালোভেরা

গবেষণায় এটি প্রামণিত যে জবা ফুল এবং এর পাতাগুলি চুলের গোড়া শক্তিশালী করে হেয়ার গ্রোথ স্টিমুলেট করে ও  চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে কাজ করে। অ্যালোভেরার সাথে জবার হেয়ার মাস্ক এজন্য চুলের জন্য খুবই কার্যকরী-

  • দুই চামচ হিবিস্কাস ফুলের পেস্ট
  • এক কাপ অ্যালোভেরা জেল

রেসিপি:

একটি পাত্রে অ্যালোভেরা জেল এবং হিবিস্কাস পেস্ট দিন এবং এটি ভালভাবে মেশান। এবার এই মিশ্রণটি চুল এবং মাথার ত্বকে ভালোভাবে এপ্লাই করুন। চুলে ভালো করে দেবার পর এভাবে প্রায় আধা ঘণ্টা রেখে দিন। সময় শেষ হওয়ার পরে, হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন এবং তারপরে কন্ডিশনার লাগান। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য এটি সপ্তাহে প্রায় একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।

অ্যালোভেরা এবং ভিটামিন-ই

ভিটামিন-ই-তে রয়েছে টোকোট্রিয়েনল নামে একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা স্ট্রেস রিলেটেড কারণে চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় ভিটামিন ই এবং অ্যালোভেরা জেল এর এই মাস্ক চুলের জন্য খুবই উপকারি। একই সাথে এটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করে স্কিনের জন্য অ্যালোভেরা দিয়ে নাইট ক্রিম হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

  • এক চামচ অ্যালোভেরা জেল
  • এক চা চামচ লেবুর রস
  • দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল
  • দুই টেবিল চামচ আমন্ড অয়েল

রেসিপি:

একটি পাত্রে সমস্ত উপাদান একত্রিত করুন এবং মসৃণ মিশ্রণ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত মেশান। এবার এই মিশ্রণটি চুল এবং মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান এবং হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন প্রায় ১০ মিনিট। এখন চুলকে এভাবে 20 মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে তারপর কন্ডিশনার লাগান। সপ্তাহে প্রায় একবার এই প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করুন।

5/5

বাজারের সেরা অ্যালোভেরা বেইজড স্কিন ও হেয়ার কেয়ার প্রডাক্টস

অ্যালোভেরা জেল ফেইস ক্লিনজার

উপযুক্ত পদ্ধতিতে আপনার মুখ ধোয়া আপনার ত্বক সুস্থ এবং পুষ্ট থাকার নিশ্চয়তা দিতে পারে। নিউট্রিপিওরের অ্যালোভেরা ক্লিনজিং ফেস ওয়াশে স্কিনকে ডিপ ক্লিনিং এর জন্য মোস্ট ইফেক্টিভ। এই অর্গানিক ফেইস ওয়াশ সেনসিটিভ এবং একনি প্রণ ত্বকের জন্য মৃদু, এবং এটি সূর্যের রশ্মি, দূষণ এবং ধূলিকণা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ টায়ার্ড স্কিনকে প্রশমিত করে এবং পুনরুজ্জীবিত করে, এর গ্লো পুনরুদ্ধার করে। টেক্সচারটি ত্বকে শোষিত করে ইম্পিওরিটিজ দূর করতে, স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করতে খুবই কার্যকরি। এটি ধুয়ে ফেলাও সহজ, কোন অবশিষ্টাংশ ছেড়ে যায় না এবং সূর্যের সংস্পর্শে আসা ত্বকের জন্য উপযুক্ত। এই মিরাকল ফেইস ক্লিনজার মেকআপ রিমুভার হিসেবেও কাজ করে।

নিউট্রিপিওর বাংলাদেশে সবচেয়ে এফোর্ডেবল প্রাইসে এই প্রিমিয়াম অ্যালোভেরা ফেস ক্লিনজার অফার করছে। এই প্রাকৃতিক স্কিনকেয়ার আইটেমে কোন ক্যামিকেল পদার্থ, রাসায়নিক বা সিন্থেটিক প্রিজারভেটিভ নেই। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় এই অল ন্যাচারাল ফেসওয়াশটি ইউজে আপনার স্কিনের পিম্পল ও একনি দূর হবে একই সাথে স্কিন হবে ফ্ললেস।

অর্গানিক অ্যালোভেরা হেয়ার অয়েল 

নিউট্রিপিওর অ্যালোভেরা হেয়ার অয়েল নিয়মিত ব্যবহার আপনার সুন্দর চুলের শাইনিনেস ও সিল্কিনেস ধরে রাখে। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চায় এই অর্গানিক অয়েল চুল এবং মাথার ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। এটি স্ক্যাল্পকে প্রশমিত করে এবং চু্লে পলিশিং ইফেক্ট দেয় এবং খুশকি দূর করতেও সাহায্য করে। 

এই অর্গানিক অয়েলে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের উচ্চ ঘনত্বের কারণে, এটি চুল এবং ত্বকের সমস্ত সমস্যার জন্য মিরাকল ট্রিটমেন্ট। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন A, C, এবং E. এছাড়া এতে আছে ন্যাচারাল ভিটামিন বি যা চুলের হারিয়ে যাওয়ার পুষ্টির যোগান দিয়ে চুলকে করে মজবুত ও ঝলমলে।

নিউট্রিপিওর অর্গানিক অ্যালোভেরা হেয়ার অয়েল কোল্ড প্রেসড পদ্ধতিতে তৈরী করা হয় ও এটি ফুললি আনপ্রসেসড ও আনরিফাইন্ড। এই বিশেষ উৎপাদন পদ্ধতির জন্য এতে সমস্ত পুষ্টি গুণাগুণ যথাযথভাবে বজায় থাকে। চুলের রাফনেস ও ফ্রিজিনেস কাটিয়ে চুলকে আবার ঘন, শাইনি ও সিল্কি করে তুলতে এই ন্যাচারাল হেয়ার অয়েলের কোনো জুড়ি নেই। 

অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার জন্য একটি কমপ্লিট স্কিন কেয়ার রুটিন

এবার নিয়ে এলাম অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করার অত্যন্ত কার্যকরী এই স্কিন কেয়ার রুটিন, যা ফলো করলে আপনার ত্বকের কালচে ভাব দূর হয়ে ত্বক কাঁচের মত চকচকে কোমল আর উজ্জ্বল ফর্সা হয়ে উঠবে যে আপনি আর কখনও বিউটি পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল করতে চাইবেন না। এই ন্যাচারাল স্কিন কেয়ার রুটিনে আছে চারটি স্টেপ-

ক্লিনজিং

অ্যালোভেরা দিয়ে ফেসিয়ালের শুরুতে প্রথমে একটি পাত্রে দুই চামুচ অ্যালোভেরা জেল ও দুই চামুচ কাঁচা দুধ নিয়ে ভালো করে মিক্স করে নিন। ব্যাস ক্লিনজারটি তৈরি হয়ে গেছে। এটা হলো একটি বিশেষ ধরনের পুষ্টিকর ক্লিনজার ফেসিয়াল।

এখন ক্লিনজারটি আপনার ত্বকে দুই মিনিট ধরে মেসেজ করুন। এই ভাবে ম্যাসেজ করার ফলে ত্বকের সমস্ত ময়লা দূর হয়ে যায় ও ত্বক পরিষ্কার হয়ে যায়। তারপর দুই মিনিট পর টিস্যু বা পাতলা কাপড় দিয়ে সোগুলো মুছে ফেলুন বা মুখ ধুয়ে নিন।

স্ক্রাবিং

স্ক্রাবার তৈরির জন্য প্রথমে একটি পাত্রে এক চামুচ চালের গুড়া নিয়ে নিন। তারপর এর মধ্যে দুই চামুচ অ্যালোভেরা জেল দিয়ে ভালো করে মিক্স করে নিন। এখন এই স্ক্রাবটি আপনার মুখে আঙ্গুল দিয়ে সার্কুলেশন করে মেসেজ করুন পাঁচ মিনিট পর্যন্ত।

ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে চালের গুঁড়া খুব কার্যকরী। এই পাঁচ মিনিট ধরে ম্যাসেজ এর ফলে আপনার ত্বকের সমস্ত কালো ময়লা দাগ উঠে গিয়ে মুখ পরিষ্কার হয়ে যাবে। তারপর নরমাল পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ফেসিয়াল ম্যাসাজ 

একটি পাত্রে দুই চামুচ অ্যালোভেরা জেল নিয়ে এর মধ্যে এক চামুচ অ্যালমন্ড অয়েল ও দুইটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে সবগুলো উপাদান ভাল করে মিশিয়ে নিন। ব্যাস এভাবে আপনার ফেসিয়াল ম্যাসেজ জেলটি তৈরি করা হয়ে গেল। এখন এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকে দশ মিনিট পর্যন্ত সার্কুলেশন করে ম্যাসেজ করে লাগিয়ে নিন যেভাবে ফেসিয়াল ম্যাসেজ করা হয়।

এই মিশ্রণটি শীতকালে খুব কার্যকরী ত্বকের জন্য। কারণ শীতে ত্বকের শুষ্কতার হাত থেকে এই ফেসিয়ালটির ব্যবহার আপনাকে রক্ষা করবে। সাথে আপনার ত্বক হবে প্রাণবন্ত আর তুলতুলে নরম ও কোমল। এছাড়া ত্বক থেকে বয়সের ছাপ, কুচকে যাওয়া সব দূর হয়ে যাবে। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

ফেইস প্যাক

একটি পাত্রে দুই চামুচ আটা, আধা চামুচ হলুদ গুঁড়া এবং তিন চামুচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ভালো করে সবগুলো উপাদান মিক্স করে নিন। তারপর এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকে ভালো করে ঘষে লাগিয়ে নিন।

এই ফেইস প্যাকটি আপনার কাল ত্বককে অনেক উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলতে খুবই কার্যকরী। তার সাথে সাথে আপনার ত্বক থেকে সমস্ত প্রকার দাগকেও দূর করে দিবে। এছাড়াও এই ফেস প্যাকটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বকে একটি ন্যাচারাল প্লইংনেস ও ব্রাইটনেস চলে আসবে।

আপনার ত্বকে এই প্যাকটি ভালকরে ম্যাসেজ করে লাগিয়ে রেখে দশ মিনিট পর্যন্ত রেখে দিন। তারপর দশ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন অথবা মুছে ফেলুন।

আর এরই মাধ্যমে আপনার ফেসিয়ালের পুরো প্রসেসটি কমপ্লিট হয়ে গেল। নিশ্চয় আপনার চেহারার উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্যের পার্থক্যটা এখনি দেখতে পাচ্ছেন! এখন থেকে ঘরে বসে নিজের ফেসিয়াল নিজেই করতে পারবেন। এমনকি ঘরের অন্যদেরকেও এই ফেসিয়ালটি করে দিতে পারবেন। এতে আপনার সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচবে। তাহলে আজ থেকে শুরু হোক অ্যালোভেরা দিয়েই আপনার সম্পূর্ণ ত্বকের যত্ন।

আশা করি অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চার ব্যপারে আপনাদের যা কিছু অজানা ছিল তার কম বেশি সবকিছুই এখন জানা হলো। অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা ও এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছেন। অ্যালোভেরা আমাদের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য এবং বাহ্যিক ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভেষজ উপাদান। রূপচর্চা ও শারিরীক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এই উদ্ভিদটি হতে পারে আপনার সহায়ক। তাই আসুন আমরা এর সঠিক ব্যবহার বিধি সম্পর্কে জানি এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালোভেরা দিয়ে রূপচর্চা করি।

Share:

Nutripure Bangladesh

Leave a Reply