Hair Conditioner তৈরি করার ঘরোয়া ৫টি উপায়

Top 5 Homemade Hair Conditioner

হেয়ার প্রডাক্ট গুলোর বিজ্ঞাপনে যেমন দেখা যায় তেমন ঝলমলে ও সিল্কি চুল কে না চায়! অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সৌন্দর্য যতটা না ন্যাচারাল, তার থেকে বেশি লাইটিং আর এডিটিং এর ইফেক্ট। তবে সত্যিকারের ঝলমলে ও মসৃণ সফট চুল যে শুধু সপ্নই থেকে যাবে এমনটা নয়, বিশেষ করে আপনার কাছে যদি পারফেক্ট কিছু হেয়ার প্রডাক্ট থাকে। এমনই একটি প্রডাক্ট হলো হেয়ার কন্ডিশনার। বাজারে অনেক ধরনের কন্ডিশনার পাওয়া যায় যেগুলোর নামের সাথে যতই অর্গানিক লেখা থাক না কেন, কিছুটা ক্যামিকেল এগুলোতে থাকেই। তাই আজকে এর সলিউশন হিসেবে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ১০০% ন্যাচারাল হোমমাইড Homemade Hair Conditioner বানানোর কিছু রেসিপি।

Hair conditioner of honey and olive oil

মধু ও অলিভ ওয়েলের Hair Conditioner :

মধু ও অলিভ ওয়েলের আছে ন্যাচারাল কন্ডিশনিং ক্ষমতা। আর এটা একসাথে এপ্লাই করা হচ্ছে যেহেতু, এরা চুলকে সফট করতে ও ভেতর থেকে পুষ্টি যোগাতে চমৎকার কাজ করে। এটা একই সাথে খুশকি দূর করতেও কাজ করে। 

যেভাবে ব্যাবহার করবেন-

  • ২ টেবিল চামচ মধু আর ৪ টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল নিন। ভালোভাবে মিক্স করে একটা স্মুথ জেলের মত বানিয়ে নিন।
  • চুল কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিয়ে ভালোভাবে স্ক্যাল্প ও চুলে এপ্লাই করুন।
  • এবার একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা কভার করে রাখুন ৩০ মিনিট। 
  • সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 
  • ভালো ফলাফলের জন্য মাসে ২ বার ব্যবহার করুন।

Hair conditioner of eggs and olive oil

ডিম ও অলিভ ওয়েলের Hair Conditioner :

ডিম চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে ও চুলকে ডিপলি কন্ডিশনিং করার জন্য খুবই বিষ্ময়কর একটা উপাদান। আর অলিভ ওয়েলের আছে চুলকে পুষ্টি যোগানোর ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমন খুশকি দূর করার ক্ষমতা। 

যেভাবে ব্যাবহার করবেন-

  • ২ টা ডিমের কুসুম নিম ও ২ টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল নিন
  • ভালো করে মিক্স করে একটা পেস্ট তৈরী করুন। সামান্য পানি মিক্স করতে পারেন।
  • এবার চুল কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিয়ে ভালোভাবে স্ক্যাল্প ও চুলে এপ্লাই করুন।
  • একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা কভার করে রাখুন এক থেকে দেড় ঘন্টা।  
  • সালফেট-ফ্রি পারফিউমড শ্যাম্পু ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করুন।

কোকোনাট ওয়েলের Hair Conditioner :

কোকোনাট ওয়েলে আছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি এসিড যা চুলে পুষ্টি যোগাতে খুবই কার্যকর। কোকোনাট ওয়েল হলো সব থেকে বেশি ব্যাবহৃত হেয়ার প্রডাক্ট যা চুল পড়াহেয়ার ড্যামেজ সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয় ও একই সাথে কন্ডিশনার হিসেবেও অসাধারন কাজ করে।

যেভাবে ব্যাবহার করবেন-

  • ৩ টেবিল চামচ কোকোনাট ওয়েল জ্বাল দিয়ে নিন।
  • একটা টাওয়েল গরম পানিতে ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন।
  • এবার জ্বাল দেয়া কোকোনাট ওয়েল স্ক্যাল্প থেকে চুলের আগা পর্যন্ত ভালোভাবে এপ্লাই করুন।
  • এবার চুল সেই স্টিমড টাওয়েলে জড়িয়ে ৪৫ মিনিট রেখে দিন। 
  • সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।

বেকিং সোডার Hair Conditioner :

বেকিং সোডায় আছে এন্টি ফাংগাল গুণাগুণ যা স্ক্যাল্পের ইনফেকশন দূর করে। এটা বিভিন্ন ধুলাবালি, ময়লা ও স্ক্যাল্পের এক্সট্রা ওয়েল রিমুভ করে স্ক্যাল্পকে হেলদি রাখে.

যেভাবে ব্যাবহার করবেন-

  • একটা কাপের চারভাগের একভাগ বেকিং সোডা নিন। 
  • ২ টেবিল চামচ কোকোনাট ওয়েল নিন।
  • এবার ভালোভাবে মিক্স করে পেস্ট বানিয়ে নিন।
  • এবার চুল কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিয়ে ভালোভাবে স্ক্যাল্প ও চুলে এপ্লাই করুন।
  • একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা কভার করে রাখুন এক ঘন্টা।  
  • সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফলের জন্য মাসে অন্তত একবার ব্যবহার করুন।

শিয়া বাটার Hair Conditioner :

শিয়া বাটারে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও এন্টি অক্সিডেন্ট। এতে আরো আছে ফ্যাটি এসিড ও ওয়েল যা চুলকে সফট ও সিল্কি করে ও স্ক্যাল্পে একটা সুদিং ভাব এনে দেয়। একই সাথে এর এন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণ স্ক্যাল্পকে ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করে।

যেভেবে ব্যাবহার করবেন-

  • ১ টেবিল চামচ শিয়া বাটার, ২ টেবিল চামচ কোকোনাট ওয়েল, ১টেবিল চামচ আর্গন ওয়েল ও কয়েক ফোঁটা রোজমেরি ওয়েল নিয়ে নিন।
  • প্রথমে কোকোনাট ওয়েল ও শিয়া বাটার অল্প আঁচে জ্বাল দিয়ে নিন। এরপর বাকি উপাদান এতে এড করুন ও ভালো করে মিক্স করুন। জেলির মত হয়ে আসলে জ্বাল দেয়া বন্ধ করুন।
  • মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে এবার চুল কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিয়ে ভালোভাবে স্ক্যাল্প ও চুলে এপ্লাই করুন।
  • একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা কভার করে রাখুন এক ঘন্টা।  
  • সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন।

আমরা জেনে নিলাম খুব সহজে ঘরে বসে হেয়ার কন্ডিশনিং করার ৫ টি রেসিপি। হেলদি হেয়ার পেতে চুলকে কন্ডিশনিং করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হেয়ার নিয়মিত কন্ডিশনিং এ হেয়ার ড্যামেজ রিকভার হয়, চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দূর হয়, চুল শাইনি ও ঝলমলে হয় এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ চুলকে স্মুথ ও সিল্কি করে ও সহজে ম্যানেজেবল করে। 

তো আজকে থেকেই আপনার ক্যামিকেল ফ্রি হেয়ার কেয়ার রুটিনে এড করে নিন আপনার পছন্দের যেকোনো একটি হোমমেইড হেয়ার কন্ডিশনিং রেসিপি। কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন কোন রেসিপিটি আপনাদের সব থেকে বেশি কার্যকরী ও সহজ লেগেছে।

Nutripure Bangladesh

Leave a Reply